আসসালামু আলাইকুম।
ক্রীড়া জগতে আন্ডারডগ বা দুর্বল দলগুলোর সফলতা আসলেই সবাইকে অবাক করে দেয়। যখন একটি অপ্রত্যাশিত দল বা খেলোয়াড় রা ভালো একটা দল কে হারিয়ে সফলতার শীর্ষে পৌঁছে যায় তখন সবার অবাক চোখ স্পষ্ট ভেসে উঠে। আজকের পোস্ট এ আমরা আলোচনা করবো বিশ্ব ক্রীড়া ইতিহাসের ৫ টি দুর্বল দল নিয়ে যাদের সফলতা দর্শকদের অবাক করে দিয়েছিল। তো চলুন আর কথা না বলে শুরু করা যাক।
১৯৮০ সালের অলিম্পিক হকি ফাইনাল (মিরাকল অন আইস)
প্রথমেই আমরা জানবো ইতিহাস করা এক জয় সম্পর্কে। ১৯৮০ সালের লেক প্ল্যাসিড শীতকালীন অলিম্পিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হকি দল সোভিয়েত ইউনিয়ন এর বিপক্ষে জয় লাভ করেছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দলের খেলোয়াড় রা ছিল কলেজ শিক্ষার্থী, আর অপরদিকে সোভিয়েত ইউনিয়ন এর দল এ ছিল সব পেশাদার খেলোয়াড় রা। এই জয়কে ইতিহাসে মিরাকল অন্য আইস বলা হয় এবং আজও ক্রীড়া জগতে এটি অনেক বড় বিস্ময়কর জয় বলা হয়ে থাকে।
লেস্টার সিটির প্রিমিয়ার লিগ জয় (২০১৫-১৬)
লেস্টার সিটি ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে একটি ছোট দল হিসেবে পরিচিত ছিল। Bookmakers রা তাদের জন্য সবসময় rate বেশি দিত। কিন্তু ২০১৫-১৬ মৌসুমে তারা এক বিশাল বিস্ময় সৃষ্টি করে প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা জয় করে। যেটা তাদের জয় এর কোনো কথাই ছিলনা। bookmakers রা এই খেলায় তাদের পক্ষে ৫০০০:১ দিয়েছিল। এই জয় ছিল আধুনিক ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা আন্ডারডগ গল্প।
রজার বেনিস্টার – প্রথম ৪ মিনিটের মাইল দৌড় (১৯৫৪)
এটা ইতিহাসের অন্যতম একটা জয় ছিল। সবাই যেটাকে অসম্ভব মনে করেছিল। রজার বেনিস্টার সেটাকেই সম্ভব করে দেখিয়েছে। ১৯৫৪ সালে ৪ মিনিটের মাইল ফলক দৌড় এ তিনি জয়লাভ করেছিলেন। রজার বেনিস্টার তার আত্মবিশ্বাস ও দৃঢ়তার মাধ্যমে এই অসম্ভবকে সম্ভব করেছিল। যা ক্রীড়া ইতিহাসে নতুন এক অনুপ্রেরণা তৈরি করেছে। আসলে চেষ্টা করলে সফলতা আসবেই এবং অসম্ভব কেও সম্ভব করা সম্ভব হয়, শুধুমাত্র আল্লাহর সাহায্যে।
১৯৬৯ সালের মেটস বিশ্ব সিরিজ জয়
নিউ ইয়র্ক মেটস Baseball খেলার ইতিহাসের সবচেয়ে দুর্বল দলগুলোর ভিতর একটি ছিল। কিন্তু ১৯৬৯ সালে তারা এমন এক বিস্ময়কর জয় লাভ করেছিল যা ইতিহাসে লেখা রয়েছে। নিউ ইয়র্ক মেটস বেসবল খেলায় বিশ্ব সিরিজ জয় করেছিল। দলটিকে দ্য মিরাকল মেটস উপাধি দেয়া হয়েছিল এই জয় এর কারণে। এই জয় ছিল মেটসের জন্য প্রথম বিশ্ব সিরিজ শিরোপা এবং এটি আজও বেসবল ইতিহাসে অন্যতম সেরা আন্ডারডগ গল্প হিসেবে বিবেচিত হয়।
জেমস “বাস্টার” ডগলাসের মাইক টাইসনের বিরুদ্ধে বিজয় (১৯৯০)
জেমস ‘বাস্টার’ ডগলাস, মাইক টাইসনের বিরুদ্ধে বিজয় লাভ করেছিলেন, ১৯৯০ সালে। টাইসন তখন ছিল অপ্রতিরোধ্য চ্যাম্পিয়ন এবং সবাই জানতো টাইসন এ জিতবে বক্সিং টা। সকলেই টাইসন এর জয়ের ব্যাপারে নিশ্চিত ছিল। কিন্তু ডগলাস এই সম্ভবনা কে হারিয়ে দিয়ে টাইসনকে পরাজিত করেন। যা ইতিহাসের বিস্ময়কর একটা বিজয় ছিল এবং বক্সিংয়ের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আন্ডারডগ জয়গুলির একটি অর্জন করেন।
এই ঘটনাগুলো প্রমাণ করে যে ক্রীড়া জগতে সবকিছু সম্ভব। কে কখন জয়লাভ করবে, কে কাকে হারিয়ে দিবে এটা বলা কঠিন। আন্ডারডগ দল বা খেলোয়াড়দের সাফল্য কেবলমাত্র তাদের মেধা, পরিশ্রম, এবং আত্মবিশ্বাসের প্রতিফলন নয়, বরং এটি আমাদের সকলের জন্য এক অনুপ্রেরণার উৎস।